অল দ্যা ব্রাইট প্লেস সিনেমাটি ব্রেট হ্যালি এর পরিচালনায় ২০২০ সাথে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায়। এখন অব্দি IMDB রেটিং অনুযায়ী ২০৫০০+ লোকের ভোটে ৬.৫/১০ অবস্থান করছে। মুভিটির মূল ভাষা ইংরেজি, বাংলাভাষীদের জন্য রয়েছে বাংলা সাবটাইটেল। মুভি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।


হতাশা, ক্ষোপ, উদাসীনতা একটা মানুষের বেচে থাকার ইচ্ছাকে আঘাত করে। আমরা প্রতিনিয়ত কত মানুষের সাথেই পরিচিত হই। আমরা তাদের ততটুকুই জানতে পারি যতটুকু তারা জানাতে চায়, সেটুকুই দেখি যতটা তারা দেখাতে চায়।


মানুষ ভালো থাকতে চায়, বেচে থাকতে চায়। আর তার জন্য সবাই এমন কিছু করে যাতে তারা জীবন থেকে হারিয়ে না যায়। একটা ইন্টারভিউতে হুমায়ুন ফরিদ স্যারকে উপস্থাপিকা জিজ্ঞাস করেছিলো " আপনি তো জানেন স্মোকিং করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তবুও কেনো করেন? " তখন তার রিপ্লাই কিছুটা এমন ছিলো " আমরা প্রতিনিয়ত এমন অনেক কিছু করি যা ঠিক নয় আর সেটা আমরা নিজেরাও জানি তবুও করি, কারন সেটা করতে ভালো লাগে। হয়তো এগুলো ছাড়লে নিজের অস্তিত্বকেই ছাড়া হয়ে যাবে " ঠিকই তো অস্তিত্ব বিহীন জীবনের কোনো মানে হয়? হয় না।


অল দ্যা ব্রাইট প্লেস মুভির প্লট


ভায়োলেট তার বোনকে হারিয়ে হতাশায় কাতর, প্রবনতা রয়েছে সুইসাইডের। তখন ফ্রিঞ্চের দেখা মিলে ভায়োলেটের৷ একই স্কুলের থাকায় একটি প্রজেক্টে একসঙে কাজ করার সুযোগ। ফিঞ্চের অশেষ চেষ্ঠা ভায়োলেটকে এটা বোঝাতে যে জীবন আসলেই সুন্দর। প্রস্তাব জানায় জীবনের সৌন্দর্যকে এক্সপ্রোর করার৷ ভায়োলেটকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে চলে ফিঞ্চের চেষ্ঠা তাকে জীবনের মর্মতা শেখানো সেখানে চলে দুজনেরই দুঃখ, হতাশা, ক্ষোপ নিয়ে আলোচনা আর ফিঞ্চের সাথে থেকে ভায়োলেটের জিবনে মিলে এক নতুন স্বাদ। এদিকে ভায়োলেটকে আলোর সন্ধানের আশায় পাড়ি জমাতে শেখানো ফিঞ্চ মাঝে মাঝেই হঠাৎ উধাও হয়ে যায়৷ তখন চালাতে থালে তার ব্যক্তিগত ভালো লাগানোর চেষ্ঠা, বেচে থাকার প্রচেষ্টা। তবে কেনো? অন্যকে বাচতে শিখানো ফিঞ্চ আছে কেমন? ভালো আছে নাকি তার মধ্যেও রয়েছে এক razz..


এটা মূলত হতাশাগ্রস্ত মানুষদের কেন্দ্র করেই তৈরি করা হয়েছে। তাদের পজিটিভ থিংকিং দিতেই Netflix এর এই প্রজেক্ট৷ সিনেমাটোগ্রাফি, লোকেশন, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এক্টিং সব গুলোই খাপে খাপ ছিলো তবে গল্পে একটু উইকনেস লক্ষনীয় আরেকটু ভালো ভাবে ডিস্ক্রাইব করে একটা মিনি সিরিজে রুপান্তর করলে মনে আরেকটু ভালো হতো। জেনিফার নিভেনের উপন্যাসের ( একই নামের ) আলোকে তৈরি করা মুভিটিতে শেষ দিকে হঠাৎ টুইস্ট রেখেছে যা দ্বারা আনেকেই আবেগী হলেও আমার কাছে তেমন একটা প্রভাবিত বলে মনে হয় নাই কারন ওই যে বললাম আরেকটু ডিস্ক্রাইব করে একটা মিনি সিরিজ আকারে তৈরি করলে পার্ফেক্ট হতো।


অল দ্যা ব্রাইট প্লেস মুভির পরিচিতি


এতোক্ষন যে আলোচনাটি করছিলাম তা ছিলো Netflix দ্বারা সৃষ্ট ২০২০ এর ২৮ ফেব্রুয়ারিতে রিলিজ হওয়া মুভি All the bright places যেখানে ফিঞ্চ হিসেবে ছিলো Justice Smith আর ভায়োলেটের চরিত্রে ছিলো Elle Fanning. আমি মূলত নেটফ্লিক্সের এভারেজ কাজ করবো এটাকে।


মুভিটিতে বিধ্যমান ভার্জিনিয়া উলফের একটি উক্তি খুবই ভালোলেগেছিলো তা হলো : 

If you don't tell the true about yourself, you can not tell it about other people 


অল দ্যা ব্রাইট প্লেস নামের সার্থকতা


প্রশ্ন যদি হয় মুভির নামের সার্থকতা কি বজায় থেকেছে? তাহলে বলবো নামটি একেবারেই খাপ খেয়েছে মুভির সাথে, এখানে দেখানো হয়েছে এমন কিছু প্লেস বা জায়গা যেগুলোকে সচারাচর মানুষ ইগ্মর করে আর ফিঞ্চ ভায়োলেটকে এটাই শিখিয়েছে যে পরিত্যক্ত স্থানেও সৌন্দর্য খুজে পাওয়া যায়, যদি সময় নিয়ে স্থান গুলো ভালো ভাবে দেখা হয়৷ তেমন মনে যতই ক্ষত থাকুক যতই আধার থাকুক তা অবশ্যই ফিক্স করা যায়, আলোকিত করা যায় প্রয়োজন কেবল সময়ের আর একটি স্পেশাল একটা শিক্ষা লুকাহিত যা মুভির একেবারে শেষে প্রকাশিত হয়েছে, বলে মজাটা নষ্ট করবো না দেখে নিবেন৷ আর কিছু বললে স্পয়লার হয়ে যাবে তাই এখানেই শেষ করছি। আপনারও যদি খনে খনে মন খারাপ হয়ে থাকে তবে বেশ কিছু পজিটিভ জিনিস আছে এতে যা পছন্দ হওয়ার মত।

Post a Comment

Previous Post Next Post